মালয়েশিয়া পর্যটন নগরীর দেশ। ব্যবসা, শিক্ষা, সংস্কৃতি সব বিষয়ে বিশ্বে মালয়েশিয়ার যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। বিশ্বের বহু দেশের মানুষ এসে মালয়েশিয়া বসবাস করছে। কারণ এখানকার আবহাওয়া নাতিশীতোষ্ণ, সবাই খাপ খাইয়ে নিতে পারে।ঢাকার খরচে যে কেউ মালয়েশিয়া বসবাস করতে পারেন। মালয়েশিয়ায় ছাত্র, শিক্ষক, প্রকৌশলী, চিকিৎসক, শ্রমিক মিলিয়ে প্রায় ১০ লাখ বাংলাদেশী বাস করেন
আধুনিক মালয়েশিয়া গড়ার পেছনে বাংলাদেশীদের অক্লান্ত পরিশ্রম রয়েছে। এটা আর কোনো দেশ দাবি করতে পারবে না। বাংলাদেশীদের এই অবদান দেশটির সরকার ও সাধারণ মানুষও স্বীকার করেন।বাংলাদেশের নাগরিকরা কঠোর পরিশ্রম, সততা আর দক্ষতায় মালয়েশীয়দের ভালোবাসা ও আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। এসব কারণে বিয়ে করার জন্য মালয়েশীয় নারীদের পছন্দের তালিকায় রয়েছেন বাংলাদেশী যুবকরাও।
বাংলাদেশী নাগরিকদের মালয়েশীয় স্ত্রীরা মিলে সংগঠন গড়ে তুলেছেন। তাঁদের
কার্যক্রমও আছে। নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের পাশাপাশি একে অন্যের বিপদে-আপদে
পাশে দাঁড়ান তাঁরা। একই সঙ্গে তাঁরা মালয়েশিয়ার সমাজে বাংলাদেশীদের সততা,
কর্মদক্ষতার কথাও তুলে ধরেন।
বাংলাদেশী নাগরিকের মালয়েশীয় স্ত্রী সাশা সৌন সংগঠনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলেন, ‘আমাদের মালয়েশীয়দের মধ্যেও কেউ কেউ বাংলাদেশীদের ছোট করে দেখেন।তারা মনে করেন, বাংলাদেশ একটা গরিব দেশ। তারা শুধু মালয়েশিয়ায় কাজ করতে আসে, তারা শ্রমিক। আর বাংলাদেশীদের মধ্যেও মালয়েশীয় নারীদের নিয়ে একটা খারাপ ধারণা আছে।
আমরা বাংলাদেশের গ্রামগঞ্জে গিয়ে দেখেছি, সেখানকার মানুষের ধারণা,
মালয়েশিয়া খারাপ দেশ। মালয়েশীয় মেয়েরা শুধু বাংলাদেশী ছেলেদের আটকে রাখে।’
তার মতে, বাংলাদেশীরা অনেক ভালো। তারা কঠোর পরিশ্রম করতে ভালোবাসেন।
তাদের মধ্যে রয়েছে সততা ও ভালোবাসা। মালয়েশিয়া মুসলিমপ্রধান দেশ।
বাংলাদেশের মানুষও মুসলিম। বাংলাদেশিদের মধ্যে ধর্মের প্রতি রয়েছে অগাধ
বিশ্বাস আর তারা অতিথিপরায়ণ।
সুসি, লিজা, শাশা মনে করেন, বাংলাদেশীরা এখানে শুধু কাজ করেন না, তারা কাজ করানও। তাদের প্রতিষ্ঠানে অনেক মালয়েশীয় নারী-পুরুষ স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করেন।সম্প্রতি মালয়েশিয়ায় ব্যাপক বন্যা হয়। দুর্গতদের পাশে অন্য কোনো দেশ না দাঁড়ালেও বাংলাদেশ দাঁড়িয়েছে। এটাও বাংলাদেশী নাগরিকদের মালয়েশীয় স্ত্রীদের গর্বের আরেকটি কারণ।
বিষয়টি মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব তুন রাজ্জাকেরও নজরে আসে। যদিও এটা আবার বাংলাদেশীদের প্রতি মালয়েশিয়ায় বসবাসরত অন্য জাতির মানুষের জন্য ঈর্ষার একটি কারণ বলে মনে করেন ‘মিষ্টি বউ’ সংগঠনের উদ্যোক্তারা।মালয়েশিয়ায় প্রবাসী শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জাহিদ হামিদির কাছে বাংলাদেশীরা প্রাধান্য পান। এর একটি প্রমাণ হলো, গত ৪ নভেম্বর মালয়েশিয়ার সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হামিদি বলেন, ‘এটা চোখ বন্ধ করেই বলা যায়, বাংলাদেশী শ্রমিকরা অন্যদের তুলনায় বেশি সৎ।
আমরা দেখেছি, তারা যদি ব্যবসার ক্যাশে বসেন অথবা পেট্রল স্টেশনের কাউন্টারে বসেন, তারা অনেক বেশি বিশ্বস্ততার পরিচয় দেন।
0 comments:
Post a Comment