Wednesday, June 24, 2020

বসন্তের শহর-কুনমিং যেন নব যৌবনা (Spring city-kunming)

stone forest


চীনের ইউনান প্রদেশের রাজধানী ‘কুনমিং’কে বলা হয় ‘চির বসন্তের শহর’। কুনমিং হচ্ছে চাইনিজ শব্দ যার অর্থ হচ্ছে চির বসন্তের শহর। সারা বছরই বসন্ত কালের মতো আবহাওয়া। না শীত, না গরম। তিন দিকে পাহাড় এবং একদিকে বিখ্যাত ‘ডায়ানচি লেক’। মনোরম আবহাওয়া ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা কুনমিং প্রাচীনকাল থেকে ভ্রমন পিপাসুদের আকৃষ্ট করছে।

ঢাকা থেকে প্লেনে কুনমিং এয়ারপোর্টে পৌঁছাতে সময় লাগে মাত্র দুই ঘন্টা। সুন্দর ঝকঝকে বিশাল এয়ারপোর্টটি ২০১২ সালে চালু হয়েছে। এর মধ্যে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ১০০টি এয়ারপোর্টের মধ্যে স্থান করে নিয়েছে এটি। ছিমছাম যানজটমুক্ত আধুনিক শহর। আগে থেকেই হোটেল বুকিং দেওয়া থাকলে ভালো। ট্যাক্সি নিয়ে হোটেলে পৌঁছে বিশ্রাম নিন।

ইন্টারনেটের বদৌলতে আগে থেকেই দশর্নীয় স্থানগুলোর একটি তালিকা তৈরি করে রাখতে পারেন। আর কোনদিন কোনটা দেখবেন তাও ঠিক করে রাখবেন আগে থেকেই।সফরের প্রথম দিন শহরের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে শহরটি সম্পর্কে একটি ধারণা নেওয়ার চেষ্টা করলে পরবর্তীতে সুবিধা হবে আপনার জন্য। সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে ৬২০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত প্রায় ২৪০০ বছরের একটি পুরানো শহর বর্তমানে আধুনিক স্থাপত্য শিল্পের এক অনুপম নিদর্শন। আকাশ ছোঁয়া সব দৃষ্টি নন্দন অট্টালিকা এবং প্রশস্ত রাস্তা এর বিশেষত্ব।

এখানকার মানুষজনও খুবই ভদ্র ও সহনশীল। চারদিকে ফুলের সমারোহ। সারা বছরই নানা রঙ্রে ফুলে চোখ জুড়িয়ে যায়। মনে হয় পুরো শহরটিই যেন একটি বৃহৎ ফুলের বাগান।বিশাল একটি ফুলের মার্কেট আছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ফুল রপ্তানি হয় এখান থেকে।প্রায় সবখানে নাকে আসবে ফুলের সুবাস যা আপনাকে মুগ্ধ ও পুলকিত রাখবে সবসময়।

এখানকার যাতায়াত ব্যবস্থাও খুবই ভাল। বাস, ট্রেন, মেট্রো সবই আছে। বাস খুবই সহজলভ্য এবং তুলনামূলকভাবে সস্তা। ১ অথবা ২ আরএমবি দিয়ে শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যাওয়া যায় (১ আরএমবি সমান ১৩ টাকা)।

দর্শনীয় স্থানঃ  স্টোন ফরেস্ট’(Stone Forest )

পৃথিবীর প্রথম বিস্ময় হিসেবে খ্যাত ‘স্টোন ফরেস্ট’। কুনমিং শহর থেকে ১২০ কি. মি. দক্ষিণে এই দশর্নীয় স্থানটি অবস্থিত। বাস, ট্রেন, ট্যাক্সিতে খুব সহজেই যাওয়া যায় এখানে। আমরা সকালে কুনমিং রেলস্টেশন থেকে একটি ট্রেনে মাত্র দেড় ঘণ্টায় স্টোন ফরেস্টে পৌঁছি। স্টোন ফরেস্ট প্রকৃতির এক অদ্ভুত খেয়াল। চারদিকে পাথরের অভূতপূর্ব সব কারুকার্য। প্রায় ৩৫০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ছোট বড় উঁচু নীচু বিভিন্ন আকৃতির পাথর বৃক্ষের মত দাঁড়িয়ে আছে।

দূর থেকে দেখেলে মাঝে মাঝে বিশাল গাছ, জীবজন্তু বা মানুষের আকৃতি বলে একে ভুল হতেই পারে।
স্টোন ফরেস্টের প্রবেশমূল্য ১৭৫ আরএমবি। দশনার্থীদের জন্য সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকে।

আরো দেখতে পারেনঃ

ডায়ানচি লেক,
বাডর্স অ্যান্ড ফ্লাওয়ার মার্কেট,
ইউয়ান্তং বৌদ্ধ মন্দির,
ওয়েস্টান হিল,
ডাগুয়ান পার্ক,
আদিবাসী গ্রাম,
ইউনান জাতীয় জাদুঘর,
গ্রান্ড ভিউপার্ক,
হুয়াটিং টেম্পল,
ড্রাগন গেট 

কোথায় থাকবেনঃ

বাংলাদেশিদের থাকা ও খাওয়া  জন্য এখানে অনেকগুলো বাংলাদেশি গেস্ট হাউস বা রেস্টহাউস আছে। এদের সার্ভিসও ভাল। এসব গেস্ট হাউসের প্রতিনিধিদের সাক্ষাত পাওয়া যাবে বিমান বন্দরে নামলেই। এছাড়াও শহরের কেন্দ্রস্থলে হোটেলও থাকা যাবে। প্রচুর হোটেল আছে, ভাড়াও খুব বেশি নয়। আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধাই হোটেলগুলোতে পাওয়া যাবে। 

0 comments:

Post a Comment